ধানতলা পাচার মামলার অভিযোগ এবং বিচারপ্রক্রিয়া
ধানতলা থানায় একটি পাচার মামলার সূত্রপাত হয় ৩১ আগস্ট ২০২১। মামলাটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৬৩, ৩৬৫, ৩৬৬বি, ৩৭০, ৩৪, আইপিসি আইটিপি অ্যাক্ট এবং ইন্ডিয়ান ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীনে নথিভুক্ত হয় (মামলা নম্বর: ৪১২/২০২১)।
ঘটনার বিবরণ
সন্দীপ কুমার, বিএসএফের এসআই, সীমান্ত টহলরত অবস্থায় দেখতে পান কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছে। টহলে তার সাথে ছিলেন অবিনাশ কুমার ও পঙ্কজ মীনা। বিএসএফ তাদের ধাওয়া করলে বেশিরভাগ ব্যক্তি পালিয়ে যায়। তবে একটি নাবালিকা মেয়েকে আটক করা হয়।
মেয়েটির বক্তব্য
বিএসএফের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়,
“আমাকে নাচের প্রোগ্রামের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতে আনা হচ্ছিল। কিন্তু পরে জানতে পারি আমাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হবে। আমি পালিয়ে বিএসএফের কাছে আশ্রয় নিই।”
মেয়েটি আরও জানায়, বাংলাদেশে বসে বাদশা নামে এক ব্যক্তি এই পাচারচক্রের মূল পরিকল্পনাকারী। তার স্ত্রী লতা এই মেয়েটিকে পাচারের কাজে ব্যবহার করছিল।
তদন্ত এবং গ্রেপ্তার
বিএসএফ ফোন ট্যাপিংয়ের মাধ্যমে পাচারচক্রের দুই সদস্য বকুল মণ্ডল ও জসিম মণ্ডলকে ধানতলার একটি পেট্রোল পাম্প থেকে গ্রেপ্তার করে। ধানতলা থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সিআইডি তদন্তভার গ্রহণ করে।
বিচারপ্রক্রিয়া
রানাঘাট এডিজে এফটিসি আদালতে মামলাটি বিচারাধীন হয়। ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর, আদালত অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে।
রায় এবং সাজা
আদালত নিম্নলিখিত সাজা প্রদান করে:
- ধারা ৩৬৩, ৩৬৫: ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ₹১০,০০০ জরিমানা।
- ধারা ৩৬৬বি: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ₹১০,০০০ জরিমানা।
- ধারা ৩৭০: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ₹১০,০০০ জরিমানা।
সমস্ত সাজা একই সঙ্গে কার্যকর হবে।
সমাজে প্রভাব
এই মামলার রায় পাচারকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি সমাজে একটি শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দেবে যে, এই ধরনের অপরাধ কঠোরভাবে দমন করা হবে।
তদন্তে অবদানের স্বীকৃতি
পাচারচক্রের বিরোধিতায় বিএসএফ, ধানতলা থানা, এবং সিআইডি যৌথভাবে তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। তদন্তে নেতৃত্ব দেন সিআইডি ইন্সপেক্টর অঞ্জনা ভৌমিক। তার পরিচালিত তদন্ত এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য কোর্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।