পুরনো শিষ্য আফ্রিদির সাথে আড্ডায় মত্ত টেইট। 

নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আতশবাজির অবাধ ব্যবহারে ঢাকার আকাশে ধামাকা দেখা গেছে পয়লা জানুয়ারির প্রায় সারারাত ধরেই যে ধামাকা চলেছে পরের দিন সকাল পর্যন্ত পাকিস্তানি এক ক্রিকেটারের ব্যাটিং এর মাধ্যমে শাহিন আফরিদীর চার ছক্কায় মুখরিত হয়েছে মিরপুরের একাডেমী মাঠ। অনুশীলন শেষে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় শাহিনের দেখা হয়েছে চিটাগং এর হেডকোচ সন টেইটের সাথে, 2022 সাল থেকে পাকিস্তানের পেইস বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন অজি সাবেক এই তারকা পেসার। সেই সূত্রে টেইটের পুরনো শিষ্য শাহিন তাই তার সাথে দেখা হওয়া মাত্র দাঁড়িয়ে আলোচনা করেছেন কিছু সময়, এরপর তার পিঠ চাপড়ে বিদায় নিয়েছেন। বোলার আফরিদীর পরিচয় একপাশে রেখে ফেরা যাক তার ব্যাটিং প্রসঙ্গে। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন নতুন বছরের প্রথম অনুশীলনে, যেন শুরু করলেন সেখান থেকেই প্র্যাকটিসে। আফরিদীর লক্ষ্য ছিল একটাই, যে করেই হোক বড় শট খেলা, যেভাবেই হোক বাউন্ডারি আদায় করা। ওভার বাউন্ডারি চাওয়াটাই ছিল সবচেয়ে বেশি মাসেল আর রিস্ট পাওয়ারের প্রয়োগে।

এর জন্য যা খুব একটা কঠিন ব্যাপার নয়, শুধু ফরচুন বরিশাল নয়, এবারের বিপিএল এরই সবচেয়ে বড় তারকা বলা যায় শাহিনশাহ আফরিদীকে। তার ব্র্যান্ড ভ্যালু এই টুর্নামেন্টে আলাদা মাত্রা যোগ করবে, কোন সন্দেহ ছাড়াই। যদিও থাকবেন 15 জানুয়ারি পর্যন্তই, মাঠের সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের জন্য শাহিন হবেন হট কেক, এটাই স্বাভাবিক। ব্যাটিং অনুশীলন শেষ করে তাই শাহিন প্রস্তুত হয়েছেন ক্যামেরার সামনে আসার জন্য। এসময়ও শাহিন হাসি ঠাট্টায় মশগুল থেকেছেন আশপাশের মানুষগুলোর সাথে, ক্যামেরার সামনেও তিনি মাঠের মতোই সাবলীল।

এবারে বিবেলে শাহিন নিজের অভিষেক ম্যাচটা খেলেছেন, মাত্র তাতেই তিনি ছিলেন উজ্জ্বল। তবে বল হাতে নয়, সবাইকে চমকে দিয়ে ব্যাটিং এ ঝড় তুলতে দেখা গেছে তাকে। হাই স্কোরিং ম্যাচের চার ওভার বল করে 33 রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন পাকিস্তানের এই পেইসবলার। তবে 246 লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে, মাত্র 61 রানে যখন পাঁচ উইকেট হারায় বরিশাল, তখন তাকে ব্যাটিং এ পাঠিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন তামিম ইকবাল। ঠিক যে কাজটা করার জন্য তাকে পাঠানো হয়েছিল, বিনা দ্বিধায় করেছেন সেটাই। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গ শুধু দেননি, 17 বলের ইনিংসে তিনটি ছক্কা ও একটি চারের সাহায্যে 27 রান করে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ব্যাটিং এ পাওয়ার হিটিং দারুণ ভাবে দেখিয়েছেন তিনি, সঙ্গে দলকেও জানান দিয়েছেন যতদিন আছেন ততদিন শুধু বোলার নয়, তাকে একজন পুরস্তুর ব্যাটার হিসেবেও বিবেচনা করতে পারে বরিশাল, যিনি স্লগিং এর কাজে দারুণ উপযোগী।

বাংলাদেশ ছাড়ার আগে বরিশালের হয়ে আরো চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন শাহিন আফরিদী। সেসব ম্যাচে সাত নম্বরের চেয়েও আরো ওপরে যদি তাকে ব্যাটিং এ পাঠানো হয়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। গ্লামারাস স্টারকে বিদায় দেয়ার আগে তার কাছে পুরো ফায়দা আদায় করে নিতেই চাইবেন তামিম ইকবাল। সে তো অবসম্ভব বিষয়। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে।

এদিকে, বরিশাল দলের জোটিচিনহো নতুন এক ভরসা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। শাহিনের ব্যাটিং পারফরম্যান্সের পাশাপাশি, দলের মধ্যে তাঁর উপস্থিতি এবং শক্তি ইতিমধ্যেই এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।